যেভাবে বর্তমান সরকার গঠন হয়েছিল, জানা গেল অবাক করা তথ্য!

সাবেক সেনা প্রধান ইকবাল করিম ভূঁইয়ার স্ট্যাটাস থেকে জানতে পারলাম বর্তমান সরকার কিভাবে গঠন হয়েছিল, এর পিছনে মাস্টার প্লানার কারা ছিল।

হাসিনার পতনের পর থেকে একটি প্রশ্নের উত্তর আমরা কখনোই পাইনি যে, এই কেয়ার টেকার সরকারের উপদেষ্টা যারা হয়েছে কারা এদেরকে নির্বাচন করেছিল !

আই.কে.বি-এর স্ট্যাটাস থেকে জানতে পারলাম তৎকালীন ডিজিএফআই ( যারা হাসিনার নিয়োগপ্রাপ্ত ছিল , এবং পড়শী দেশের মনোনীত ছিল ), হাসিনার পতন নিশ্চিত হলে আসিফ নুজরুলকে ডেকে সরকার প্রধান হতে বলে !এরপর থেকে কি কি হয়েছে সেগুলো আমরা জানি , আবার রিপিট করার প্রয়োজন নেই।

মূলত দুজন ছাত্র প্রতিনিধিকে উপদেষ্টায় স্থান দিয়ে ছাত্রদের মধ্যে ইস্পাতসম কঠিন এককতার মধ্যে প্রথম ভাঙ্গন ধরিয়ে দেয় ( পারফেক্ট গোয়েন্দা প্লান ) ।

খেয়াল করে দেখুন ছাত্ররা যদি সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুজন করে প্রতিনিধি নিয়ে একটি কাউন্সিল গঠন করে উপদেষ্টা নিয়োগ দিতো তাহলে ফারুকী, ব্রি শাখাওয়াত, রিজওয়ানা , আসিফ নজরুল এবং যারা গত সরকারের সুবিধা পেয়েছে তারা কেউ উপদেষ্টা হতে পারতো না।

যেহেতু ডিজিএফআই দ্বারা উপদেষ্টা নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাই এমন লোকদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে যারা কোন ডায়নামিক ডিসিশন নিয়ে বিগত সরকারের বিচার করতে পারবে না। তাদের সেই গাটস নাই , যেমনটি আছে মাহমুদুর রহমানের। তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ বিডিআর হত্যাকান্ড-এর তদন্ত না হওয়ার ডিসিশন।

বাংলাদেশের ২০ কোটি মানুষের একটাই দাবি ছিল , আর কিছু না হোক বাংলাদেশকে পঙ্গু করে দেয়া সেই বিডিআর হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত দোষীদের নাম জানা , এবং এদের কঠিন বিচার করা।কিন্তু সেই প্রাণের দাবিকেই সর্ব প্রথম আঘাত হেনে বলা হয় , তদন্তের দরকার নাই !

যদিও সেটা পরে মুখ রক্ষার্থে চেঞ্জ করেছে, কিন্তু আমার ধারণা ওটাকে বেশি দূর আগাতে দেয়া হবে না। আর একটি ডিসিশন নেয়া হয়েছিল জুলাইয়ের বিপ্লবে অংশ গ্রহণকারী ছাত্রদের বিচারের আওতায় আনা। পরে সিদ্ধান্ত কি হয়েছে সেটা বড় কথা নয় , কথা হলো এই সিদ্ধান্তগুলো কেন এবং কে নিয়েছিল !

পতিত সরকারের দোসররাই যেহেতু উপদেষ্টা নিয়োগ দিয়ে ছিল তাই এই ধরণের সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছিল। কিভাবে ডঃ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ দেয়া হলো ?!

দুজন ছাত্র উপদেষ্টার দাবির প্রেক্ষিতেই ডঃ ইউনূসের নাম সম্মুখে আসে, নইলে আসিফ নুজরুলই প্রধান উপদেষ্টা হতো।
তাহলে দেখা যাচ্ছে ডঃ ইউনুস ব্যাতিত বাকি সবাই ডিজিএফআই মনোনীত উপদেষ্টা।

যে ডিজিএফআই ভিন দেশের স্নাইপার দিয়ে দেশের মানুষকে খুন করার পারমিশন দিয়েছিল, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আনা নেয়া করা হয়েছিল ( ভিডিও আছে ) সেই তারাই এই কেয়ার টেকার সরকার গঠন করেছিল !

আর ঠিক একারণেই পতিত সরকারের সকল মন্ত্রী এমপি , নেতা , আমলা , চোর বদমাইশ সবাই ক্যান্টনমেন্টে আশ্রয় পেয়েছিল, এবং এখনো ভিআইপি ট্রিটমেন্টে আছে অনেকেই।

মূলত এই আওয়ামী লীগের মনোনীত ডিজিএফআই-এর কারণেই কোন নেতা , এমপি মন্ত্রীর দুর্নীতির বিচার এখনো হয়নি, পুলিশ নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়, আমলারা নিজেরা হলিডে মুডে চলে যায়, এবং ভিতরে ভিতরে নিজেদের উপার্জিত টাকা পাচার করতে থাকে।
বড় বড় নামকরা বদমাইশ , সাংবাদিক পর্যন্ত গত তিনমাস ধরে তাদের একাউন্ট থেকে শত শত কোটি টাকা সরিয়ে নিতে পেরেছে।

জেলা, উপজেলা লেভেলে আওয়ামী কোন সন্ত্রাসী পাবলিকের হাতে মার্ খায় নাই। যদিও সেই ডিজিএফআইয়ের সদস্যরা আর নাই , কিন্তু তারা সকল লুটের সম্পত্তি পাচার করতে দিয়েছে , এবং হাসিনার লেসপেন্সাররা যাতে বিচারের সম্মুখীন না হয় তারজন্য গণ হাস্যকর মামলা দিয়ে এমন অবস্থা করে রেখেগেছে যে তাদেরকে কোনদিন জেল খাটতে হবে না ।

এখন বুঝতে পারছেন, কেন এই সরকার মুখ থুবড়ে পড়েছে আমলা এবং বিচারক নামের অসৎ দলীয় পান্ডাদের অসহযোগিতায়।
এখন নিশ্চিত বলা যায় আগামী নির্বাচন পর্যন্ত কিছুই হবে না , সংস্কার ফঙস্কার কিছুই হবে না, বা হতে দিবে না। আগামী নির্বাচন হবে আওয়ামী লুটেরাদের টাকায়।
তারা নিজেরা নির্বাচন করবে না , কিন্তু তাদের হাজার হাজার কোটি টাকা তাদের এলাকার যেসব বিএনপি বা জামাতের এমপি হবে তাদের পিছনে খরচ করবে।

আর এই সব বদমাইশরা আওয়ামী টাকায় বিজয়ী হয়ে পতিত আওয়ামীদের কারো কোন বিচার করবে না, উল্টো বিচার করতে গেলে বাধা দিবে। এজন্যই দ্রুত নির্বাচন চায় রাজনৈতিক দলগুলো। যত দ্রুত নির্বাচন হবে তত দ্রুত তারা গর্ত থেকে বের হয়ে তাদের অর্জিত হাজার হাজার কোটি টাকা একজয় করতে পারবে।

প্রথম দিকেও সন্দেহ থাকলেও এখন আমি পুরো নিশ্চিত গণ অভ্যুথান হাইজ্যাক হয়ে গিয়েছে। নতুনভাবে দেশ গড়ার যে সুবর্ন সুযোগ এসেছিল তা হাসিনার পতনের আগেই হাইজ্যাক করে নিয়ে যায় আগের ডিজিএফআই এবং সদ্য সাবেক জেনারেলদের মনোনীত পুতুল উপদেষ্টাদের নীরব সমর্থনে।

সত্যিকার অর্থে যদি নতুন সভ্য দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চান তবে , সারা দেশের টপ বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রধান কয়েকটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজন ছাত্র এবং একজন ছাত্রী প্রতিনিধি নিয়ে একটি বিপ্লবী কাউন্সিল গঠন করতে হবে.
তারা ডঃ ইউনুস ব্যাতিত বর্তমানের সকল উপদেষ্টাদের বহিস্কার করবে। এরপর পরীক্ষা নিয়ে নিয়ে উপদেষ্টা নিয়োগ দিবে যারা আগামী দুই বছর দেশ চালাবে।

আগামী দুই বছর কোন নির্বাচন হবে না যতদিন প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের সকল লুটপাটকারী আমলা , থার্ড ক্লাস বিচারক, অসৎ দুর্নীতিবাজ গুমখুনের পুলিশ কর্মতাদের বিচার না হবে।

এ যদি না করতে পারেন তবে মনে রাখবেন, আওয়ামীদের নিষিদ্ধ করেন আর নাই করেন , আগামী নির্বাচন হবে তাদের টাকায়।
তারাই খেলবে কোন এলাকায় বিএনপি অথবা জামাতের কে এমপি হবে। ফলে , তারা ক্ষমতায় না থাকলেও ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করবে বর্ডারের ওপারে বা এপারে থেকে, তাদের বিচার তো বহুত দূর কি বাত !

সূত্র: Shafi Haque