রাজশাহীতে পদ্মাসহ ৫ নদীর পানি ফের বাড়ছে

পদ্মাসহ রাজশাহী অঞ্চলের নদীগুলোতে পানি ফের বাড়ছে।

শুক্রবার সকাল থেকে নদীগুলোতে পানি বাড়তে থাকে। পদ্মাসহ এ অঞ্চলের বড় কয়েকটি নদীতে ১২ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে গড়ে চার সেন্টিমিটার করে।

রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার এনামুল হক জানান, শুক্রবার প্রতি তিন ঘণ্টায় এক সেন্টিমিটার করে পদ্মা নদীতে পানি বেড়েছে। এদিন সকাল ৬টায় পদ্মার রাজশাহী পয়েন্টে পানির লেভেল ছিল ১৬ দশমিক ২০ মিটার। সন্ধ্যা ৬টায় সেটি বেড়ে হয়েছে ১৬ দশমিক ২৪ মিটার। যা বিপৎসীমার ২ দশমিক ২৬ মিটার নিচে।

এনামুল হক জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় রাজশাহী পয়েন্টে পদ্মার পানির লেভেল ছিল ১৬ দশমিক ২৫ মিটার। সন্ধ্যা ৬টায় সেটি কমে দাঁড়ায় ১৬ দশমিক ১৯ মিটারে। তবে সারারাত এক সেন্টিমিটার পানি বাড়ে। তবে সকাল থেকে প্রতি তিন ঘণ্টায় এক সেন্টিমিটার হারে পানি বৃদ্ধি পায়।

তিনি বলেন, এর আগে গত ১৭ আগস্ট পদ্মার পানির লেভেল ছিল ১৬ দশমিক ৫৪ মিটার। পরের দিন ১৮ আগস্ট থেকে পানি কমতে থাকে। এ ছাড়া এ অঞ্চলের অন্যান্য নদীগুলোরও পানি কমছে গত কয়েকদিন ধরে।

এনামুল হক বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে উজানে অর্থৎ পশ্চিমবঙ্গে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে পদ্মায় পানি বেড়েছে। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে তা বিপৎসীমা অতিক্রমের সম্ভাবনা নেই। রাজশাহী অঞ্চলে পদ্মার পানি বিপদসীমা ধরা হয় ১৮ দশমিক ০৫ মিটার। ২০১৩ সালে একবার বিপৎসীমা অতিক্রম করেছিল। এর পর আর পদ্মার পানি বিপৎসীমা ছুঁইনি।

রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোকলেসুর রহমান বলেন, “আমরা আগে পাঁচ দিনের পূর্বাভাস দিতাম। এখন সেটি বাড়িয়ে ১০ দিন করা হয়েছে। ফলে আগামী ১০ দিনেও গঙ্গা-পদ্মার পানি ডেঞ্জার লেভেল ক্রস করার কোনো আশঙ্কা নেই।

“সেই সঙ্গে এ অঞ্চলের বড় নদীরগুলোর মধ্যে মহানন্দা, পুনর্ভবা, আত্রাই ও বারনই নদীরও পানি ডেঞ্জার লেভেল অতিক্রম করার আশঙ্কা নেই।”

তবে বন্যা নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলেও মনে করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই কর্মকর্তা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, রাজশাহী অঞ্চলের বড় নদীরগুলোর মধ্যে মহানন্দা নদীর ডেঞ্জর লেভেল ২০ দশমিক ৫৫ মিটার। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পয়েন্টে সন্ধ্যা ৬টায় এ নদীর পানির লেভেল ছিল ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। আর সকাল ৬টায় ছিল ১৮ দশমিক ৪৬ মিটার।

অপরদিকে, পুনর্ভবা নদীর ডেঞ্জার লেভেল ২১ দশমিক ৫৫ মিটার। এ নদীতেও শুক্রবার ১২ ঘণ্টায় চার সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। সন্ধ্যা ৬টায় এ নদীর চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর পয়েন্টে পানির লেভেল ছিল ১৮ দশমিক ৫৮ মিটার।

একই ভাবে বেড়েছে আত্রাই নদীর পানিও। নাটোরের সিংড়া পয়েন্টে সন্ধ্যা ৬টায় আত্রাই নদীর পানির লেভেল ছিল ১০ দশমিক ৮১ মিটার। এ নদীর ডেঞ্জার লেভেল ১২ দশমিক ২০ মিটার। যা বিপৎসীমার ১.৩৯ মিটার নিচে।

আর বারনই নদীর ডেঞ্জার লেভেল ১৩ দশমিক ৯৬ মিটার। শুক্রবার সন্ধ্যায় এ নদীর পানির লেভেল ছিল ১২ দশমিক ৩০ মিটার। যা বিপৎসীমার ১ দশমিক ৬৬ মিটার নিচে।

এদিকে, উজানের ভারী বৃষ্টির কারণে বরেন্দ্র অঞ্চলের খাড়িগুলো (খাল) উপচে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে রাস্তাঘাট ও কালভাট (ব্রিজ) ভেসে গেছে।

বিশেষ করে রাজশাহীর তানোর উপজেলার বেশকিছু খাড়ি উপচে পড়ে আশাপাশের মাঠগুলো প্লাবিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতের উজানের ভারী বৃষ্টির পানি নেমে আসায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।