
১০ বছর বয়স… খেলার বয়স, হাসির বয়স, স্বপ্ন দেখার বয়স। আয়মানও দেখত— বড় হয়ে ডাক্তার হবে, মা-বাবার মুখে হাসি ফোটাবে। কিন্তু সেই আয়মানের জন্য ছিল না আর কোনো আগামীকাল। গত সোমবার দুপুরে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলের ক্লাসরুমে বসে যখন পাঠ নিচ্ছিল সে, তখনই আকাশ ছুঁয়ে আসা আগুন নেমে এলো শিক্ষাঙ্গনে। এক মুহূর্তেই স্তব্ধ হয়ে গেল বইয়ের পাতায় চোখ রাখা সেই ছোট্ট প্রাণ।
তিনদিন ধরে বেঁচে থাকার প্রাণপণ চেষ্টা করছিল শিশুটি। হেরে গেলো অবশেষে, শুক্রবার (২৫ জুলাই) নিভে গেল প্রদীপটি। এদিন সকালে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আয়মান।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, আয়মানের শরীরের ৪৫ শতাংশ দগ্ধ ছিলো। শিশুটির মরদেহ ইতোমধ্যে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে বার্ন ইনস্টিটিউট। উত্তরায় প্রথম জানাজা শেষে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে শরীয়তপুরে তার মরদেহ নেয়া হবে বলেও জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, মাইলস্টোন ইস্যুতে বর্তমানে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে আরও ৫১ জন। এরমধ্যে বার্নে ভর্তি ৬ জনের অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক নাসির উদ্দীন জানিয়েছেন, রোগীদের আলাদা আলাদা ক্যাটাগরিতে ভাগ করে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। এই মুহুর্তে সিঙ্গাপুর ও চীনের চিকিৎসক দল কাজ করছেন। ১৫ জনের অবস্থা উন্নতির দিকে। তাদের পর্যায়ক্রমে আগামীকাল বা পরশু হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হবে।
এদিকে, হাসপাতাল চত্বরেও জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা। সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও বিমান বাহিনী রাখছে কড়া নজরদারি। বার্ন ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে কোনো ব্লাড বা স্কিন ডোনারের প্রয়োজন নেই। আহতদের চিকিৎসার সব খরচ বহন করবে সরকার।