সহজ ম্যাচ কঠিন করে জিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ‘প্রথম’ সিরিজ জয়

মিরপুরে ১৩৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১২৫ রানে অলআউট হয়ে গেছে পাকিস্তান। যদিও ১৫ রানে পাঁচ উইকেট পড়ার পর মনে হচ্ছিলো খুব সহজেই জিতবে বাংলাদেশ। তবে সহজ ম্যাচ শেষ পর্যন্ত কঠিন করে ৮ রানের জয়ে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ। এই সংস্করণে পাকিস্তানের বিপক্ষে এটিই বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ জয়।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় পাকিস্তান।

ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই অর্থাৎ ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই আউট হয়ে যান মো. নাঈম শেখ। তানজিদ তামিমের জায়গায় আজ খেলতে নেমেছিলেন তিনি। ৭ বল খরচায় করেছেন তিন রান।

এরপর পঞ্চম ওভারে পরাপর দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সালমান মির্জার ওই ওভারের প্রথম বলেই হাসান নাওয়াজের হাতে ক্যাচ তুলে ফিরে যান অধিনায়ক লিটন কুমার দাস। ৯ বলে তার অর্জন ৮ রান। একই ওভারের চতুর্থ বলে রান আউট হয়ে যান গত ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা তাওহীদ হৃদয়। তিনি রানের খাতাই খুলতে পারেননি।

টিকতে পারেননি গত ম্যাচের ম্যান অব দ্য ম্যাচ ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনও। একপ্রান্ত আগলে দেখেশুনেই ব্যাট করছিলেন তিনি। তবে পাওয়ার প্লে’র শেষ মুহূর্তে আহমেদ দানিয়ালের বলে ক্যাচ তুলে দেন ফাহিম আশরাফের হাতে। নো মিসটেক! সাজঘরে ফিরে যান ১৪ বলে ১৩ রান করে।

এরপর শেখ মেহেদী ও জাকের আলী ইনিংস বড় করার চেষ্টা করেন। তবে ২৫ বলে ৩৩ রান করে আউট হয়ে যান তিনি। এরপর ক্রিজে জাকের একাই লড়াই চালিয়ে যান। বাকিরা শুধু যাওয়া-আসার মধ্যেই ছিলেন।

শামিম ফিরে যান ১ রান করে। তানজিম সাকিব এবং রিশাদ ফেরেন যথাক্রমে ৭ ও ৮ রানে। শরিফুল শেষ ওভারে রান আউট হন। মোস্তাফিজ থাকেন ০ রানে অপারিজত। ইনিংসের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে পাঁচটি ৬ ও এক চারের সাহায্যে করেন ৫৫ রান।

অন্যদিকে পাকিস্তানের হয়ে বোলিংয়ে ২ উইকেট করে পেয়েছেন সালমান মির্জা ও আহমেদ দানিয়াল।

১৩৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারের শেষ বলেই দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে উইকেট হারায় পাকিস্তান। পারভেজ ইমন ডিপ পয়েন্টে ডাইভ দিয়ে বল থামান, রিশাদ হোসেন করে থ্রো। স্টাম্প ভাঙেন লিটন। সাইম আইয়ুব ফেরেন ১ করে। পরের ওভারে শরিফুল ইসলামের দুর্দান্ত সুইংয়ে গোল্ডেন ডাকে এলবিডব্লিউ হন মোহাম্মদ হারিস। ফখর জামানও শরিফুলের শিকার হয়ে ফেরেন তিনি ৮ বলে ৮ রানে।

পঞ্চম ওভারে টানা দুইটি বলে দুর্দান্ত বাউন্সারে ব্যাটারদের পরাস্ত করেন তানজিম সাকিব। হাসান নেওয়াজ আর মোহাম্মদ নওয়াজ-দুই ব্যাটারই উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ০ রানে। ১৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বলতে গেলে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে পাকিস্তান। ১৮ বলে ১৩ রান করে শেখ মেহেদীর বলে আউট হন খুশদিল।

শেষদিক আব্বাস আফ্রিদি আর ফাহিম আশরাফের ব্যাটে আশা দেখছিল পাকিস্তান। ১৩ বলে ১৯ করা আব্বাসকে বোল্ড করেন শরিফুল ইসলাম। তবে ফাহিম আশরাফ দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত তার প্রতিরোধ ভাঙেন রিশাদ। ৩২ বলে ৪টি করে চার-ছক্কায় ফাহিম করেন ৫১।

অন্য প্রান্তে থাকা আহমেদ দানিয়েল তখনও ব্যাট চালাচ্ছিলেন। জয়ের জন্য শেষ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। তাদের হাতে ছিল এক উইকেট। মুস্তাফিজের করা ওভারের প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সমীকরণ সহজ করেন দানিয়েল। পরের বলেও উড়িয়ে মেরেছিলেন এই ব্যাটার, তবে এবার বল যায় সরাসরি মিডউইকেটে দাঁড়িয়ে থাকা শামীমের হাতে। তাতে ৮ রানের জয় পায় বাংলাদেশ।