ডামি নির্বাচনের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১৯৩ জনের বিরুদ্ধে টাঙ্গাইলে মামলা

২০২৪ সালে ডামি নির্বাচনের আয়োজন এবং ভোট চুরির অভিযোগে টাঙ্গাইলে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৯৩ জনের নামে মামলা হয়েছে। সোমবার (১৯ মে) দুপুরে টাঙ্গাইলের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ভূঞাপুর থানা আমলী আদালতে বিএনপি নেতা কামরুল হাসান মামলাটি দায়ের করেন। পরে ম্যাজিস্ট্রেট রুমেলিয়া সিরাজাম মামলাটি আমলে নিয়ে ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তদন্তের নির্দেশ দেন।

মামলার বাদী কামরুল হাসান (৫৫) টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ভারই গ্রামের মৃত মমতাজ উদ্দিন আহমেদের ছেলে এবং অলোয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

আদালত সূত্র জানায়, মামলায় ১৯৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১৫০–২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিদের তালিকায় রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর) আসনের সাবেক এমপি তানভীর হাসান ছোট মনির, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী আব্দুল আওয়াল, তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এবং টাঙ্গাইলের সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শহিদুল ইসলামসহ পুলিশ ও প্রিজাইডিং অফিসার, আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সাংবাদিকদের নাম।

বাদী মামলায় উল্লেখ করেন, ভারতের নির্দেশক্রমে শেখ হাসিনা অন্যান্য আসামিদের সাথে যোগসাজশ করে বিগত ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি একটি ডামি নির্বাচনের আয়োজন করেন। বাদী কামরুল হাসান ভূঞাপুরের অলোয়া ইউনিয়নের ভারই উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটার ছিলেন। তিনি অন্যান্য ভোটারদের সঙ্গে ওই কেন্দ্রে ভোট দিতে গেলে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। আসামিরা তাকে মারধর করে এবং হত্যার হুমকি দেয়। নির্বাচনে পুলিশ ও প্রিসাইডিং অফিসারের সহায়তায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ভোট কেন্দ্র দখল করে জোরপূর্বক নৌকা মার্কায় সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে। এভাবে অন্যের ভোট চুরি করে টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তানভীর হাসান ছোট মনিরকে এমপি পদে নির্বাচিত করা হয়। এতে দেশ ও জনগণের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।

বাদীপক্ষের আইনজীবী, টাঙ্গাইল বার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু রায়হান খান বলেন, শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে মোট ১৯৩ জনের বিরুদ্ধে এই মামলা রুজু করা হয়েছে। বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। পরে ভূঞাপুর থানার ওসিকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন আদালত।