আওরঙ্গজেবের সমাধি ধ্বংসের হুমকি হিন্দুদের, নিরাপত্তা জোরদার!

ভারতের মহারাষ্ট্রের ছত্রপতি সম্ভাজিনগরের খুলদাবাদে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি অপসারণের দাবি তুলেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (VHP) ও বজরং দল। তারা সমাধির দ্রুত অপসারণে দাবি তুলে বলেছেন, এখনই অত্যাচারী মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি অপসারণ না করা হলে বাবরি মসজিদের মতোই তা ধ্বংস করা হবে। যেটি ১৯৯২ সালে ধ্বংস করেছিল করসেবকরা।

এমনকী বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (VHP) ও বজরং দল হুঁশিয়ারি দিয়েছে, সোমবার থেকেই মহারাষ্ট্রজুড়ে আওরঙ্গজেবের সমাধি অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করবেন তারা। যদি সরকার তাদের দাবি না মানে তাহলে তারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাবেন। সেটাই হয়েছে! সোমবার বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) বিভিন্ন সরকারি অফিসে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। এবং খুলদাবাদে আওরঙ্গজেবের সমাধি অপসারণের জন্য স্মারকলিপি জমা দিয়েছে। সব মিলিয়ে মহারাষ্ট্রে এখন উত্তাল পরিস্থিতি।

ইতিমধ্যেই আওরঙ্গজেবের সমাধি এলাকা এবং আশপাশে ব্যাপক নিরাপত্তায় মুড়িয়ে ফেলেছে মহারাষ্ট্র সরকার। প্রয়াত মোগল সম্রাটের সমাধিস্থলে প্রবেশের আগে দর্শনার্থীদের পরিচয়পত্র দেখাতে বাধ্যতামূলক করেছে। ছত্রপতি সম্ভাজিনগর গ্রামীণ পুলিশ বিভাগ খুলদাবাদ শহরের প্রবেশপথ থেকে সমাধিস্থল পর্যন্ত একাধিক নিরাপত্তা চৌকি স্থাপন করেছে। বিক্ষোভ ঠেকাতে রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (এসআরপিএফ) ৫০ জন পুলিশ সদস্য, স্থানীয় পুলিশের ৩০ জন কর্মী, ২০ জন হোমগার্ডের একটি কোম্পানি বিভিন্ন স্থানে এবং সমাধিস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে। এমনকী সমাধিক্ষেত্রে আসা পর্যটকদের জন্যেও কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আওরঙ্গজেবের সমাধিস্থলে প্রবেশের জন্যে, হোমগার্ডদের কাছে রাখা দর্শনার্থী রেজিস্টারে নাম নিজেদের লিখতে হবে এবং পরিচয়পত্র জমা দিতে হবে।

এ প্রসঙ্গে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধিস্থলের তত্ত্বাবধায়ক পারভেজ কবির আহমেদ জানিয়েছেন, “এখানকার পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ। কোনও গুজবে কান দেবেন না। তবে সমাধি ভাঙার দাবি ওঠার পর থেকে দর্শনার্থীদের ভিড় কমে গিয়েছে। তবে রমজান মাসে সাধারণত দর্শনার্থীদের ভিড় কম থাকে। প্রতিদিন প্রায় ১০০ জন দর্শনার্থী আসেন, কিন্তু সেই সংখ্যাও এখন কমে গিয়েছে।”

মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের কাছে লেখা স্মারকলিপিতে, ভিএইচপি উল্লেখ করেছে, “আওরঙ্গজেব ধর্মান্তরিত হতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে শিখ গুরু গুরু গোবিন্দ সিংয়ের দুই পুত্রকে হত্যা করেছিলেন। মরাঠা যোদ্ধা রাজা ছত্রপতি সম্ভাজি মহারাজকে নির্যাতন ও হত্যা করেছিলেন এবং কাশী, মথুরা, সোমনাথে মন্দির ভেঙে দিয়েছিলেন। তাই আওরঙ্গজেবের যেকোনও স্মৃতিস্তম্ভ যন্ত্রণা এবং দাসত্বের প্রতীক, তাই সমাধিটি সম্পূর্ণরূপে ভেঙে ফেলা উচিত।”