চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে পূজা শেষে শহরে ফিরছিলেন বাবা-ছেলে। পথে সড়ক দুঘর্টনায় প্রাণ হারান তারা। এ ঘটনায় মারা গেছেন তাদের বহনকারী সিএনজি অটোরিকশার চালকও।
শনিবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে পটিয়ার শান্তিরহাটে সিএনজি-লরির সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে একজনের মৃত্যু হলেও হাসপাতালে আনার পর মারা যান বাকি দু’জন।
নিহতেরা হলেন— লিটু ধর (২৯) ও তার বাবা শ্রীকান্ত ধর (৬৫) এবং সিএনজি চালক আলী আজগর (৩০)।
জানা গেছে, লিটু ধর ও শ্রীকান্ত ধর দুজনেই পেশায় দন্ত চিকিৎসক। নগরের চৌমুহনী মোড় এলাকায় ব্যক্তিগত চেম্বার আছে শ্রীকান্ত ধরের। সেখানেই প্র্যাক্টিস করতেন ছেলে লিটু ধর। তিন ছেলের মধ্যে লিটু ধর ছিলেন শ্রীকান্তের মেজ ছেলে। তারা পটিয়া উপজেলার ধলঘাট ইউনিয়নের পশ্চিম গৈড়লা গ্রামে নিজ বাড়িতে মনসা পূজা পালন করতে গিয়েছিলেন। আর সিএনজি চালক আলী আজগর একই উপজেলার জঙ্গল খাইন ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়াডের লড়িহড়া এলাকার মৃত আবদুল কাদেরের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীকান্ত ধরের আত্মীয় টগর পিংকি। তিনি সিভয়েস২৪-কে বলেন, ‘এ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন আমার কাকা শ্বশুর এবং আমার দেবর। আমার শ্বশুর বাড়িতে (গৈড়লা গ্রামে) পূজা ছিল। ওখানে পূজা হয়, বলি হয় প্রতি বছর। এ বছর আমরা বিদেশ থাকায় যেতে পারেনি। পূজা শেষে শহরে ফেরার পথে সিএনজি-লরির সংঘর্ষে এ ঘটনা ঘটে। শুনেছি আমার দেবর ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আর কাকাকে হাসপাতালে নেয়ার পর উনিও মারা যান।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঈশ্বর কেন এমন করেন, কি জন্য করেন, কারণ অজানা! ৬ মাস আগে লিটুর (দেবর) বিয়ে হয়েছে। তারা তিন ভাই, লিটু মেজ। বড় ভাই দেশেই থাকে আর ছোট ভাই কানাডায় পড়াশোনা করছে।’
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন সিভয়েস২৪-কে বলেন, ‘পটিয়ার শান্তির হাটে সিএনজি-লড়ির সংর্ঘষের ঘটনায় আহত অবস্থায় হাসপাতালে দুজনকে আনা হয়েছে। এরমধ্যে একজন শ্রীকান্ত ধর এবং অন্যজন সিএনজি চালক আলী আজগর। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুইজনেরই মৃত্যু হয়।’
একই প্রসঙ্গে পটিয়া হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌফিকুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রামমুখী একটি সিএনজি অটোরিকশা শান্তিরহাট হোয়াইট প্লাস কমিউনিটি সেন্টার এলাকায় পৌঁছালে সেটা হঠাৎ উল্টে যায়। এসময় কক্সবাজারমুখী একটি পন্যবাহী লরি অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলেই লিটু ধর নিহত হন। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা একজনকে মৃত ও আর দুইজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই। সেখানেই বাকি দুইজনের মৃত্যু হয়।’