আইপিএলকে ছারিয়ে এবার বিপিএলের বিশ্বরেকর্ড

টিকিট নিয়ে হানাহানি ও ভাঙচুর, ক্যাপ্টেন্স ডে ও আনুষ্ঠানিক ফটোশ্যুটের অনুপস্থিতি—এমন একাধিক বিতর্কের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল ২০২৫ সালের বিপিএল। তবে মাঠে ক্রিকেটের উত্তেজনা দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের অন্যতম আকর্ষণ রান, আর এবারের আসরে সেটি পুরোদমে দেখা গেছে।

বিপিএলের ১১টি আসরের মধ্যে এবারই উদ্বোধনী দিনে রান উঠেছে ৭০০-এর বেশি, যা ছিল আকস্মিক নয়। পরবর্তী দিনগুলোতে এ ধারা অব্যাহত থাকে। এবারের বিপিএলে মোট ২০টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যার মধ্যে ৪০ ইনিংসে ৮টি ইনিংসে দলীয় সংগ্রহ ২০০ রানের ওপরে গেছে। এর মানে, প্রতি ৫ ইনিংসে একটি করে ২০০ পার হওয়া দলীয় সংগ্রহ দেখা গেছে।

এছাড়া, চলতি বিপিএলে প্রতিটি ম্যাচে গড়ে ১৭টিরও বেশি ছয় দেখা গেছে। এখন পর্যন্ত ৩৪২টি ছক্কা হাঁকানো হয়েছে, যার গড় প্রতি ম্যাচে ১৭.১। এই সংখ্যাটি আইপিএলের গত আসরের সমান, যেখানে ২০২৪ সালে ৭৪ ম্যাচে ১,২৬০টি ছক্কা হয়েছিল—গড়ে প্রতি ম্যাচে ১৭.০৭ ছক্কা। যদিও ২০২৩ আইপিএলে প্রতিটি ম্যাচে ছিল গড়ে ১৫টি ছক্কা।

বলের হিসেবেও এবারের বিপিএল আইপিএলের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ২০২৪ আইপিএলে প্রতি ১৩ বলে ১টি ছক্কা হয়েছিল, আর এবারের বিপিএলে প্রতি ১৩.৩৩ বলে একটি ছক্কা দেখা গেছে।

চারের ক্ষেত্রে যদিও বিপিএল আইপিএলের কিছুটা পিছিয়ে, তবুও ২০ ম্যাচে ৫৭১টি চার মারার ঘটনা ঘটে। অর্থাৎ, প্রতি ম্যাচে গড়ে ২৮টিরও বেশি চার হয়েছে। ২০২৪ আইপিএলে ৭৪ ম্যাচে গড়ে ২৯.৩৭টি বাউন্ডারি হয়েছিল। তবে পাকিস্তানের পিএসএল তার চেয়ে এগিয়ে, যেখানে গড়ে ৩০টিরও বেশি চার প্রতি ম্যাচে মারা হয়েছিল।

এমনকি চার ও ছক্কার এই পরিসংখ্যানের বিচারে চলমান এসএ টোয়েন্টিকে ছাড়িয়ে গিয়েছে বিপিএল। কিছুদিন আগে, ঢাকা ক্যাপিটালসের তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস মিলে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ওপেনিং পার্টনারশিপ গড়েন। ২০১৯ সালে বিপিএলে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি এসেছিল, আর এবারে ২০ ম্যাচে ৫টি সেঞ্চুরি দেখা গেছে। টুর্নামেন্টের বাকি অংশে আরও সেঞ্চুরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে রানের এই উত্থানের পেছনে অনেকেই ছোট মাঠগুলোকে দায়ী করছেন। কোথাও কোথাও ৫৫ মিটার দৈর্ঘ্যের বাউন্ডারি দেখা গেছে এবারের আসরে। তবুও ব্যাটাররা অনেক ক্ষেত্রে বড় ছক্কা হাঁকিয়েছেন। দীর্ঘদিনের দুর্নাম কাটিয়ে উইকেটেও প্রাণ ফিরেছে। সব মিলিয়ে, বিপিএলের আসরে রান যা চলছে, তা সম্ভবত এবারের আসরের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন হয়ে থাকবে।