বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত দেয়া নিয়ে ভারতের নতুন করে কিছু বলার নেই বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে এ মন্তব্য করেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে বাংলাদেশের বার্তা পাওয়ার কথা জানিয়েছিলাম। তবে প্রাপ্তিস্বীকারের বাইরে এখন এ বিষয়ে নতুন করে আর কিছু বলার নেই।’
বিফ্রিংয়ে সনাতন ধর্মীয় নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনের দাবি খারিজ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ন্যায়বিচার পাবেন বলে আশা করছেন তারা।’
বিফ্রিংয়ে গত কয়েক সপ্তাহে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে ভারতের কঠোর ব্যবস্থা সর্ম্পকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করা ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে এবং ফেরত পাঠাতে অবশ্যই ব্যবস্থা নিবে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী।’
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পলায়ন করেন শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি দিল্লির একটি সুরক্ষিত এলাকায় রয়েছেন বলে জানা গেছে।
গত ২৩ ডিসেম্বর শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে ভারতকে চিঠি দেয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
একই দিন সকালে পিলখানায় বিজিবি দিবস উপলক্ষে পদক দেয়া অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছিলেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হয়েছে এক্সট্রাডিশন করার জন্য।’
কোন উপায়ে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানো হবে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে ভারতের বন্দি বিনিময় চুক্তি রয়েছে। বন্দি বিনিময় চুক্তি অনুযায়ীই তাকে ফেরানো যাবে।’
একই দিন বিকেলে দিল্লিতে এক ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণারয়ের মুখপাত্র জয়সওয়াল বলেন, আমি নিশ্চিত করছি যে, আমরা আজ বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাছ থেকে প্রত্যর্পণের অনুরোধের একটি কূটনৈতিক নোট পেয়েছি। তবে এই মুহূর্তে এ বিষয়ে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই।
জুলাই-আগস্টের গণহত্যার মামলায় গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এরপর তাকে দেশে ফেরাতে শুরু হয় নানা আইনি পদক্ষেপ। গত ১৩ নভেম্বর শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) কাছে আবেদন করে প্রসিকিউশন। এরপর আইজিপির দফতর যোগাযোগ করে ইন্টারপোলের সঙ্গে।