রংপুরের বদরগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০ জমজ শিশু পড়াশোনা করে। তাদের নিয়ে শিক্ষার্থী–অভিভাবকদের আগ্রহ–উচ্ছ্বাসের কমতি নেই। তবে দেখতে অনেকটা একই রকম হওয়ায় কে কোন জন, তা নিয়ে মধুর বিড়ম্বনায় পড়েন শিক্ষকেরা।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) চ্যানেল 24 অনলাইনের সঙ্গে কথা হয় এক জমজ শিশুর মা রাশিদা বেগমের। তিনি বলেন, ২০০৭ সালে তাদের বিয়ে হয়। ৯ বছরেও সন্তান না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। চিকিৎসার পর ২০১৬ সালে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হন। পরের বছর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জমজ ছেলে ও মেয়ের জন্ম দেন তিনি। মেয়ের নাম রাখেন জারিন আইমান খান, ছেলের নাম জারিফ আহম্মেদ খান। তারা এখন দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ছে, বয়স সাত বছর।
তিনি বলেন, ছেলের চেয়ে মেয়েটা আমার বেশি মেধাবী। তাদের চাহিদা, রুচিবোধ আলাদা। ছেলে খেতে ভালোবাসে মুরগির রোস্ট। মেয়েটার পছন্দ পোলাও, মাংস ও মিষ্টি। যতই ঝগড়া করুক, একজন আরেকজনকে ছেড়ে থাকতে চায় না।
বদরগঞ্জের শাহপাড়া গ্রামের মুকুল দাস ও শেলি রাণী দম্পতির জমজ মেয়ে বর্ণা ও বৃষ্টি। আদর করে ডাকেন হাসি ও খুশি নামে। তারা দেখতে প্রায় একই রকম। দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া দুই বোনকে শনাক্ত করতে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যান শিক্ষকেরা।
বদরগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ময়নুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বিদ্যালয়ে ২০ জমজ শিশু। একই লিঙ্গের জমজ শিশুরা দেখতে অভিন্ন হওয়ায় ক্লাসে শনাক্ত করা মুশকিল হয়ে যায়। তবে জমজ শিশুদের অন্য শিশুরা বেশ পছন্দ করে, ভালোবাসে। আমরা শিক্ষকেরাও তাদের প্রতি বাড়তি নজর রাখি।
এই বিদ্যালয়ে পড়ে জমজ শিশু ইমন রায় ও ঐশী রায়। উপজেলার গুদামপাড়া গ্রামে তাদের বাড়ি। বাবা দুর্জয় রায় ফার্নিচারের ব্যবসা করেন। মা মৌসুমি মোহন্তই সন্তানদের বিদ্যালয়ে আনা–নেয়া করেন। তিনি বলেন, তার দুই সন্তানের রুচি ও পছন্দে ভিন্নতা আছে। তবে তারা পরস্পরকে খুব ভালোবাসে।