ডেঙ্গু ও সব ভাইরাস থেকে বাঁচার দোয়া

গত বছরের মতো এবারও দেশজুড়ে ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে ডেঙ্গু। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সেই সঙ্গে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর তালিকাও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এডিস মশার বিস্তার রোধে দ্রুতই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা না গেলে, সামনের দিনগুলোতে নেমে আসবে আরও ভয়াবহতা।

গুগল নিউজে ফলো করুন আরটিভি অনলাইন

এরই মধ্যে চলতি বছর ১৬৩ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ডেঙ্গু। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩০ হাজার ৯৩৮ জন। শুধু সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। একই সময়ে হাসপাতালে রেকর্ড ১ হাজার ১৫২ জন ভর্তি হয়েছেন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে।

শুধু বাংলাদেশই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে ডেঙ্গুতে। এ ধরনের ভাইরাস থেকে নিজেকে ও পরিবারকে নিরাপদ রাখতে দোয়া শিখিয়ে দিয়েছেন রাসূল (সা.)। সঠিক চিকিৎসার পাশাপাশি এ দোয়াগুলোও পাঠ করা যায় ভাইরাসজনিত বিভিন্ন রোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে।

হজরত আব্দুল আজিজ (রহ.) বর্ণনা করেন, ‘আমি ও সাবিত একবার হজরত আনাস ইবনু মালিক (রা.)-এর কাছে গেলাম। সাবিত বললেন, হে আবু হামজা! আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি। তখন আনাস (রা.) বললেন, আমি কি তোমাকে নবিজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা দিয়ে অসুস্থ ব্যক্তিকে ফুঁ দিয়েছিলেন তা দিয়ে ফুঁ দেবো? তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ’। তখন আনাস (রা.) পড়লেন,

আল্লাহুম্মা রাব্বান-নাসি, মুজহিবাল বাসি, ইশফি আনতাশ-শাফি, লা শাফিয়া ইল্লা আনতা শিফায়ান লা ইয়ুগাদিরু সাকামা। (বুখারি; মুসলিম)

অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি মানুষের রব, রোগ নিরাময়কারী। (আপনি) আরোগ্য দান করুন, আপনি আরোগ্য দানকারী। আপনি ছাড়া আর কেউ আরোগ্য দানকারী নেই। এমন আরোগ্য দান করুন, যা কোনো রোগ অবশিষ্ট রাখে না।

কারও জটিল বা কঠিন রোগ হলে অবশ্যই চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। তবে পাশাপাশি রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শেখানো দোয়াগুলোর আমলও যথাযথভাবে করা জরুরি। আর তাতে মহান আল্লাহর অনুগ্রহে মানুষ রোগ-ব্যাধি থেকে দ্রুত সুস্থতা লাভ করবে, ইনশাআল্লাহ।

আরেকটি দোয়া, যা পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে-

রব্বি আন্নি মাছছা নিয়াদ দুররু ওয়া আনতা আরহামুর রহিমীন। (সুরা আম্বিয়া: ৮৩)

অর্থ: হে রব, আমি দুঃখ-কষ্টে পড়েছি, আর তুমি তো দয়ালুদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।

ধৈর্যের মূর্ত প্রতীক ছিলেন হজরত আইয়ুব (আ.)। বছরের পর বছর শারীরিক ও আর্থিক কষ্টে ভুগেও মহান আল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ কৃতজ্ঞ ছিলেন তিনি। পবিত্র কোরআনে ৪টি সুরার ৮টি আয়াতে আইয়ুব (আ.)-এর কথা এসেছে।

পবিত্র কোরআন থেকে জানা যায় যে, হজরত আইয়ুব (আ.) দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে ধৈর্য ধরে যান এবং অবশেষে আল্লাহর কাছে দোয়া করে রোগ থেকে মুক্তি পান। এই অসুস্থতার দিনগুলোতে তার সন্তান-সন্ততি, বন্ধু-বান্ধব সবাই তাকে ছেড়ে গিয়েছিল। এরপর মহান আল্লাহ তাকে সুস্থতা দান করেন।

বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে মহান আল্লাহর প্রিয় হাবিব সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি সকাল ও সন্ধ্যা এই দোয়া ৩ বার পড়বে, মহান আল্লাহ তাকে বিষাক্ত ও কষ্টদায়ক প্রাণীর অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবেন। (তিরমিজি: ৩৬০৪)।

দোয়াটি হলো: আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন শাররি মা খালাক।

অর্থ: আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমার মাধ্যমে প্রত্যেক শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী এবং প্রত্যেক কুদৃষ্টির অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাইছি।