সমন্বয়ক পরিচয়ে কিংবা আন্দোলনকারী পরিচয়ে কেউ যদি নিপীড়ক হয়ে উঠতে চায় তাকে আগে প্রতিহত করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সুজয় বিশ্বাস শুভ।
বুধবার (১৪ আগস্ট) বরিশাল বিভাগীয় সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
সুজয় বিশ্বাস বলেন, সমন্বয়ক কিংবা আন্দোলনকারী হয়ে কেউ যদি নিপীড়ক হয়ে উঠতে চায় সে আসলেই সত্যিকারের নিপীড়ক। কারণ সে এই আন্দোলনের ব্যানারটাকে ব্যবহার করে তার নিপীড়নকে জায়েজ করার চেষ্টা করে।
এত কষ্ট করে একটা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ যখন এ জায়গাতে দাঁড়িয়ে, আর তখন একদল মানুষ কোনো একটা ব্যানার ব্যবহার করে নিপীড়ক হয়ে উঠবে, এটা আমরা চাই না। এটা আমাদের জন্য লজ্জার এবং অপমানের।
আমরা একদল শহীদের রক্তের ওপর এখানে দাঁড়িয়ে আছি, তাই অন্য কাউকে নিপীড়ক হতে দেবেন না।
তিনি বলেন, এত সমন্বয়ক বরিশালে নেই, বরিশালে জাস্ট দুটি কমিটি আছে।
যেখানে সব মিলিয়ে ১২-১৫ জনের বেশি সমন্বয়ক হওয়ার কথা নয়। কিন্তু এখন অলিতে-গলিতে সমন্বয়কারী, এর থেকে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতিও কম ছিল মনে হয়।
বরিশালে শিক্ষার্থীদের প্রতি মানুষের যে সহানুভূতি রয়েছে, তা আসলে তাদের প্রত্যাশার থেকে বেশি বলেও মন্তব্য করেন সুজয় বিশ্বাস।
এসময় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দেশগঠনে পুলিশের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার কথা জানানো হয়। পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি বাড়িয়ে নাগরিকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও নিশ্চিতের দাবি জানান হয়।
সভায় শিক্ষার্থীরা বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী না থাকায় সড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কাজটির পাশাপাশি তল্লাশি কার্যক্রমও শিক্ষার্থীদের চালাতে হচ্ছে। কিন্তু রাতের বেলা দেখা যায় ছাত্রদের থেকে অছাত্রদের প্রাদুর্ভাব বেশি থাকায় সেটি নিয়ন্ত্রণের কথাও বলা হয়।
যার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করবে সেই শিক্ষার্থীদের একটা তালিকা দিলে পুলিশ একটি পাসের মতো দিতে পারবে। আর সেটি গলায় ঝুলিয়ে কাজ করলে মনে হয় এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। আর পাসের কার্ডটি এমনভাবে করা হবে, যাতে নকল করাও সম্ভব না হয়।
বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলীর সভাপতিত্বে সভায় সেনাবাহিনীর বরিশাল এরিয়া কমান্ডার ও সপ্তম পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) মেজর জেনারেল আবদুল কাইয়ুম মোল্লা, ৬ ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিরুল আজিম, পুলিশের বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মো. ইলিয়াস শরিফ, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার জিহাদুল কবির, কোস্টগার্ডের জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ শাহীন মজিদ উপস্থিত ছিলেন।