সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পাঁচ চাচাতো ভাই সাবেক এমপি শেখ হেলাল উদ্দিন, সাকেব এমপি শেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েল, শেখ সোহেল, শেখ রুবেল ও শেখ বেলাল উদ্দিন বাবুর নামে খুলনার ফুলতলা থানায় হামলা, মারধর ও হত্যা মামলা করা হয়েছে। ঘটনার প্রায় দুই বছর পর বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) মামলাটি করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এস এম মনিরুল হাসান বাপ্পি।
মামলার বাকি আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, সাবেক শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, সাবেক এমপি এসএম কামাল হোসেন ও আব্দুস সালাম মুর্শেদী, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদ, জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিৎ অধিকারী, নগর সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আকরাম হোসেন ও কামাল উদ্দিন বাদশা, এস এস হাবিব, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম, কামরুজ্জামান জামাল, শহিদুল হক মিন্টু, সানাউল্লাহ নান্নু, যুবলীগ নগর সভাপতি শফিকুর রহমানসহ ৮৫ জন নামে ও অজ্ঞাত আরো ৪০০ জন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২২ সালে ২২ অক্টোবর খুলনা নগরীর ডাকবাংলো মোড় সংলগ্ন সোনালী ব্যাংক চত্বরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের দিন সকালে ফুলতলা থেকে নেতাকর্মীরা সমাবেশ স্থলে যোগ দিতে মিছিল সহকারে রওনা দিলে পথে বাধা দেন করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এরপর বিএনপির নেতাকর্মীরা সড়ক পথে না এসে নদী পথে ট্রলারযোগে আসার সময় বেলা ১১টার দিকে চন্দনীমহল কাটাবনে পৌঁছালে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীবাহিনী শর্টগান, কাটা রাইফেল, বন্দুক, পিস্তল ও বোমাসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর আক্রমণ চালায়। এ সময় হামলাকারীরা শতাধিক মোবাইল ও নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেয়। ওই হামলায় শেখ সাজ্জাদুজ্জামান জিকো নামে এককর্মী গুরুতর আহত হন।
আরো বলা হয়, তারা আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে নিতে বাধা দেয়। জিকো বাইরে চিকিৎসা নেয়। চিকিৎসারত অবস্থায় ২৪ নভেম্বর জিকো ফুলতলার পয়গ্রাম কসবা ওষুধ কিনতে গেলে আসামি মেহেদী হাসান রঞ্জু, কাজী সাজেদুল, ইব্রাহিম গাজীসহ বোমা, রড ও লাঠি দিয়ে হামলা চালায়। একপর্যায়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে স্থান ত্যাগ করে। কিন্তু এ ঘটনায় মামলা করতে গেলে কোথাও মামলা গ্রহণ করা হয়নি। ঘটনার দুই দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাজ্জাদুজামান জিকোকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে মামলায় অভিযোগ রয়েছে। এ মামলায় শেখ হাসিনা, তার চাচাতো ভাই ও অন্য অনেক নেতাদের হুকুমের আসামি করা হয়েছে।
নিহত শেখ সাজ্জাদুজামান জিকোর বোন শারমিন আক্তার তনু ও তার স্বামী শেখ মেরাজ হোসেন বলেন, আওয়ামী সরকার যেভাবে এ দেশের মানুষের ওপর জুলুম-নির্যাতন-নিপীড়ন-অত্যাচার ও হত্যা-গুম-খুন চালিয়েছে, তার অবসান ঘটেছে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মাধ্যমে। এদেশের মাটিতে এ রকম আর কোনো স্বৈরাচারের স্থান নেই। আমরা চাই না আমাদের মতো কেউ আপনজন হারাক।
দিঘলিয়া থানায় খুলনা- ৪ আসনের সাবেক এমপি আব্দুস সালাম মূর্শেদীকে প্রধান আসামি করে ৮৪ জনের নামাল্লেখসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিঘলিয়া থানায় করা মামলার বাদী হয়েছেন স্থানীয় বিএনপি নেতা মো. খাইরুল ইসলাম। ২০২২ সালের ২৫ আগস্ট সন্ধ্যায় দিঘলিয়ার পুটিমারী বটতলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা এ ঘটনা ঘটে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আযম খান সরকারি কমার্স কলেজের সমন্বয়কারী শেখ রাফসান জানীকে জীবননাশের হুমকি ও গুলি করে হত্যা প্রচেষ্টার অভিযোগে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শফিকুর রহমান পলাশ, মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ শাহজালাল হোসেন সুজন ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি নাসিমের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৪-৫ জনকে আসামি করে খুলনা সদর থানায় মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার আহত রাফসান জানীর বাবা অ্যাডভোকেট শেখ রফিকুজ্জামান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।